নিজস্ব সংবাদদাতা, ঢাকা; রাজধানীর মিরপুরে ‘ককটেল বিস্ফোরণ’ ঘটিয়ে পুলিশ সদস্যদের ‘হত্যাচেষ্টার’ অভিযোগে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ ৬৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। মামলার এজাহারে নাম থাকা ৬৯ জনের উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেন বিএনপির ক্রীড়া সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি রওনকুল ইসলাম, রূপনগর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি কাউসার হামিদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াছিন আলী।
গতকাল শনিবার (২৩ফেব্রুয়ারি ২০২০) পুলিশ বাদী হয়ে পল্লবী থানায় মামলাটি দায়ের করে। তবে পুলিশ এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করেনি।
এ বিষয় রুহুল কবির রিজভী দাবি করেছেন, দলের চেয়ারপারসন কারাবন্দী অসুস্থ খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে মিরপুরে শান্তিপূর্ণভাবে তাঁরা মিছিলটি বের করেন। এটি কোনো সরকারবিরোধী মিছিল নয়, কিন্তু পুলিশ হঠাৎ তাঁদের লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তখন অনেক নেতা-কর্মীসহ তিনিও আহত হন।
তবে পল্লবী থানার পরিদর্শক মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, অনুমতি ছাড়া মিছিল নিয়ে পুলিশের কাজে বাধা ও হামলা করা এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানোর অভিযোগে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীসহ ৬৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
এ মামলার বাদী ও পল্লবী থানার এসআই রবিউল আওয়াল মামলায় দাবি করেন, গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে পল্লবীর মিরপুর-৬ নম্বর কাঁচাবাজার মসজিদের সামনে তিনি অবস্থান করছিলেন। তখন সংবাদ পান, পল্লবীর ছয় নম্বর সেকশনের ব্লক-সি, পাঁচ নম্বর অ্যাভিনিউয়ের ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানির (ডেসকো) সামনের পাকা রাস্তার ওপর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল থেকে উসকানিমূলক সরকার বিরোধী স্লোগান দেওয়া হচ্ছে। দেশকে অস্থিতিশীল করতে বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা ছিল তাদের।
এই মামলার বাদী এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, সরকারবিরোধী আন্দোলন জোরদার করতে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে মিছিলে তাঁরা নিজেদের মধ্যে হট্টগোল ও মারামারি করতে থাকে। একপর্যায়ে একে অপরের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করে। ১১টা ১০ মিনিটের দিকে রাস্তা বন্ধ করতে নিষেধ আন্দোলনকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশকে হত্যার করার লক্ষ্যে তিন থেকে চারটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এরপর তাঁরা ত্রাস সৃষ্টি করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীদের হামলায় সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) কামাল হোসেন, পুলিশ কনস্টেবল ফয়জুর রহমান আহত হন। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ বিস্ফোরিত ককটেলের অংশ বিশেষ দুটি চ্যাপ্টা টিনের জর্দার খালি কৌটা, কিছু প্যাঁচানো কালো রঙের স্কচটেপ, কয়েকটি ছোট ছোট পাথরের টুকরা, গাড়ির ভাঙা গ্লাসের অংশ বিশেষ, পাঁচটি ভাঙা ইট এবং খালেদা জিয়ার ছবিসহ অন্যান্য ছবি সংবলিত পাঁচটি ফেস্টুন জব্দ করা হয়েছে।
ককটেল বিস্ফোরণের মামলার ব্যাপারে পল্লবী থানার পরিদর্শক মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, ‘যা কিছু হয়েছে তা রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে হয়েছে। ককটেল বিস্ফোরণ তো আর রুহুল কবির রিজভী করেননি। ওনার লোকজন করেছে।’
আমাদের বাণী ডট কম/২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০/বিপিএন