হাজার বছরের বৈষম্য, বঞ্চনার অবসান ঘটানোর লক্ষ্যে সমাজতন্ত্র এক উন্নত সমাজের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল। আজও পৃথিবীর যেখানেই শোষণমুক্তির লড়াই সেখানেই সমাজতন্ত্রের আকুতি। বাংলাদেশসহ গোটা দুনিয়ায় মানব সভ্যতার বর্তমান সংকটে সমাজতন্ত্রই একমাত্র সমাধান। বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ এর ৩৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং রাশিয়ার সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের ১০২তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে কমরেড খালেকুজ্জামান এ কথা বলেন।
দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও রুশ বিপ্লব বার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার বেলা ৩টায় মুক্তাঙ্গন থেকে লালপতাকা মিছিলের পর রাজধানীর তোপখানা রোডস্থ বি এম এ মিলনায়তনে কমরেড খালেকুজ্জামানের সভাপতিত্বে ‘অক্টোবর বিপ্লবের শিক্ষা : বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও বামপন্থীদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় আলোচনা করেন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, জাতীয় গণফ্রন্টের প্রধান সমন্বয়ক কমরেড টিপু বিশ্বাস, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক কমরেড জোনায়েদ সাকি, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ এর সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোশাররফ হোসেন নান্নু, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক কমরেড ডা. ফয়জুল হাকিম লালা ও বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড রাজেকুজ্জামান রতন। আলোচনা সভা পরিচালনা করেন বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ।
কমরেড খালেকুজ্জামান বলেন, ৭ নভেম্বর ছিল রাশিয়ায় সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের ১০২তম বার্ষিকী এবং আমাদের দল বাসদের ৩৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। সেই উপলক্ষে আজকের এই আলোচনা সভার আয়োজনে বামপন্থী আন্দোলনের বিশিষ্ট নেতৃবৃন্দ তাঁদের মূল্যবান বক্তব্য রেখে আমাদের সমৃদ্ধ ও উৎসাহিত করেছেন সেজন্য তাঁদেরকে দলের পক্ষ থেকে বিপ্লবী অভিনন্দন জানাচ্ছি। একথা আজ বিতর্কের উর্দ্ধে যে সমাজতন্ত্র, পুঁজিবাদ পরবর্তী মানবসভ্যতার একটা উন্নত স্তর। এটা সমাজ বিকাশের অনিবার্য ঐতিহাসিক পরিণতি। এই পরিণতি স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঘটেনা তবে তা সময়ের চাহিদায় ও সচেতন সংঘবদ্ধ শ্রেণি সংগ্রাম বিকাশ প্রক্রিয়ায় অবশ্যম্ভাবী। সমাজতন্ত্র শ্রেণিবিভক্ত পুঁজিবাদ ও শ্রেণিহীন সাম্যবাদী সমাজের অন্তবর্তীকালীন পর্যায়। সমাজতন্ত্র শ্রেণিবিভক্তি নিয়ে যাত্রা শুরু করে এবং শ্রেণি বিলোপের মধ্য দিয়ে যাত্রা সমাপ্ত করে। সমাজতন্ত্র বহু বিস্তৃতক্ষেত্রব্যাপী গণশাসন তথা সমাজতান্ত্রিক গণতন্ত্রের ক্ষেত্র রচনা করে। উৎপাদন, বিলিবণ্টন, শাসন-প্রশাসনের সকল ক্ষেত্রে যৌথ মালিকানা ও যৌথ নেতৃত্বের চর্চায় তা কার্যকরী হয়। অসংখ্য পর্যায়ক্রমিক ধাপ একটির পর একটি অতিক্রম করে করেই সমাজতন্ত্রকে শ্রেণিবিভক্ত থেকে শ্রেণিহীনে অর্থাৎ পুঁজিবাদ থেকে সম্যবাদের প্রাথমিক পর্বে যেতে হয়। বড় দাগের কোনও একটা ধাপ সৃষ্টিশীল চেতনায় ও কর্মযোগে অতিক্রম করতে ব্যর্থ হলে তা পশ্চাদমুখী হয়ে পড়ে, আর তা থেকে মোড় ফেরানোর সাধনার বদলে তাতে গা ভাসালে তা পুঁজিবাদে ফিরে আসে। যে ঘটনা আমরা রাশিয়ায় দেখছি। এটা সমাজতন্ত্রের ঐতিহাসিক বিকাশের অস্বীকৃতি নয় বরং তার বাধাপ্রাপ্ত পথচলার অন্তর্নিহিত উদঘাটিত সত্যের স্বীকৃতি মাত্র। সমাজতন্ত্র পুঁজিবাদের তুলনায় তার শ্রেষ্ঠত্বের ছাপ কালের ক্যানভাসে এমনভাবে রেখে গেছে তা এখনও অমলিন উজ্জল। সভ্যতার অন্যতম কলঙ্কচিহ্ন নিরক্ষরতা, বেকারত্ব, ভিক্ষাবৃত্তি ও নারীদের দেহ বিক্রিকে অস্তিত্বহীন করে ফেলা সম্ভব হয়েছিল সমাজতন্ত্রে, যা কোন পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় কখনই সম্ভব হয়নি, আজও সম্ভব নয়। সমাজতান্ত্রিক রাশিয়া তার দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কমরেড লেনিনের নেতৃত্বে বলশেভিক পার্টি ১৯১৭ সালের রুশ সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব জয়যুক্ত করে শুধু রাশিয়ার সমাজে বিপ্লবাত্মক রূপান্তর ঘটায়নি, সারা বিশ্ব পরিস্থিতিতেও আলোড়ন তৈরি করেছিল। শ্রমজীবী শোষিত মেহনতী মানুষের সংগ্রামের ভরসা যুগিয়েছিল। রুশ বিপ্লবের আগে পর্যন্ত গণতন্ত্রের দাবিদার ইংল্যান্ড ও আমেরিকায় নারীদের ভোটাধিকার ছিল না। ১৯২০ সালে ও ১৯২৮ সালে ঐ দুই দেশে নারীদের ভোটাধিকার স্বীকৃত হয়েছিল। অগ্রসর পুঁজিবাদী দেশসমূহে জনকল্যানমূলক কার্যক্রম যা কিছু গৃহীত হয়েছিল তাতে সমাজতন্ত্রের প্রভাব অস্বীকার করা যাবে না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ফ্যাসিবাদের পরাজয়ে সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত ইউনিয়নের যে মূখ্য ভূমিকা ছিল তাকেও ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা যাবে না। যতদিন সমাজতন্ত্র সঠিক ধারায় এগিয়েছিল (১৯১৭ থেকে ১৯৫২) ততদিন দুর্নীতি-অপরাধ শূন্যের কোঠার দিকে নামছিল আর মানবতা মনুষ্যত্ব, শিক্ষা, সংস্কৃতির বিকাশ উচু থেকে উচ্চতর স্তরে অগ্রসর হয়েছিল এটাকেও অস্বীকার করা যাবে না। সা¤্রাজ্যবাদী পুঁজিবাদী বিশ্ব মহামন্দার কালেও সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি কিভাবে মুক্ত থেকে এগিয়ে গিয়েছিল এখনও তা গবেষণার বিষয় হয়ে আছে। আজ সা¤্রাজ্যবাদী-পুঁজিবাদী দুনিয়ায় আগ্রাসন, লুণ্ঠন, যুদ্ধ, যুদ্ধোন্মাদনা, ধ্বংসযজ্ঞ, সাম্প্রদায়িকতা, বর্ণবাদ, অপঃসংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষকতার প্রসার ইত্যাদি এক কথায় সর্বগ্রাসী সংকট চলছে। ফলে সমগ্র পুঁজিবাদী দুনিয়ায় নতুন করে সমাজতন্ত্রের আবেদন নানা মাত্রায় নানাভাবে হাজির হচ্ছে, সংগ্রাম সংহতি দানা বাঁধছে। পুঁজিবাদ-সা¤্রাজ্যবাদের দূর্গ মার্কিন মুল্লুকেও ৯৯ ভাগ বনাম এক ভাগ এর লড়াই আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম যে থাকতে পারে না তার একটা সুস্পষ্ট আভাস ও অঙ্গীকার আপনারা এখানে বারে বারে পেয়েছেন। বাম প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক শক্তিসমূহের মিলিত সংগ্রামের পথেই তা আগাামী দিনের পথ নির্দেশক হয়ে উঠবে এতে সন্দেহ নেই।
তিনি বলেন, আজ যখন আমরা রুশ বিপ্লবের ১০২তম বার্ষিকী ও বাসদ এর ৩৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করছি তখন বাংলাদেশ কোথায় আছে, জনগণ কেমন আছে? ১৯৭১ সালের সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের বাংলাদেশ, স্বপ্নের বাংলাদেশ, বিজয়ের বাংলাদেশ আজ দুঃস্বপ্নের বাংলাদেশে পরিণত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সবল বাংলাদেশ হারিয়ে গেছে, কঙ্কালের বিভৎস চেহারায় নিত্যদিন তা ভেসে উঠছে। আমাদের স্বাধীনতা লগ্নের ঘোষণাবলী ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা আর সামাজিক ন্যায়বিচার। আজ বৈষম্যের বিশাল পাহাড়ের পাদদেশে সাম্য কফিনে ঢাকা পড়ে আছে। ৫ ভাগ মানুষের দাপটে ৯৫ ভাগ মানুষের মানবিক মর্যাদা ভয়ে ত্রাসে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। আর সামাজিক ন্যায়বিচার আদালতের দেয়ালে মাথা খুড়ে জানান দিচ্ছে বিত্ত ছাড়া বিচার নাই, প্রভাব প্রতিপত্তির বাইরে নারী, শিশু, বৃদ্ধ, দরিদ্র, শ্রমজীবী, বেকার অসহায় জনগণের জন্য আইনী সুরক্ষা নেই, নিরাপত্তার গ্যারান্টি নেই। স্বাধীনতাত্তোর আমাদের সাংবিধানিক অঙ্গীকার ছিল সর্বস্তরে জনগণের ক্ষমতায়িত শাসন তথা গণতন্ত্র, শোষণমুক্ত আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থা তথা সমাজতন্ত্র, ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক বিভাজন ঘুচিয়ে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র ও সমাজ পত্তন, স্বাধীন জাতীয় বিকাশের জাতীয়তাবাদ। বর্তমানে জনগণের ক্ষমতা চর্চা তো দূরে থাকুক ভোটের বাক্স থেকে বহু দূরে তাদের সরিয়ে দেয়া হয়েছে। ভোট করার সক্ষমতা শাসকরা এতটাই হারিয়ে ফেলেছে যে দিনের ভোট রাতের অন্ধকারে করে নিতে হয়। এভাবে ক্ষমতা করায়ত্তে রাখতে রাজনীতিকে দুর্বৃত্তায়িত করে দুর্বৃত্তদের হাতে রাজনৈতিক ক্ষমতা তুলে দেয়া হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ফ্রাঙ্কেনস্টাইন হয়ে উঠা দুচারটি জায়গায় হাত দিতে গিয়ে দেখা গেল রাজনীতির পুরো মাঠই বাস্তবে এই দানবদের দখলে। ফলে ভ্রষ্ট পথে পরিচালিত নষ্ট রাজনীতি দূর করার সংকল্প বাস্তবে তাদের ভাবমূর্তি উদ্ধারের চেষ্টার মধ্যেই সীমিত হয়ে থাকবে। শোষণ-বঞ্চনা, দুর্নীতি, লুণ্ঠনের অবসান হবে না। দলীয়করণ, দুঃশাসন, দুর্নীতি ও মুনাফাবৃত্তি শাসক দলের সাথে যুক্ত সকল সাংগঠনিক কাঠামো, আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীসমূহ, আমলাতান্ত্রিক প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতিদমন কমিশন, বিচার ব্যবস্থাসহ সকল রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে রাহুগ্রাসের মধ্যে ফেলে রেখেছে। ১৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকার কর্তৃক নিয়োগকৃত ভাইস চ্যান্সেলরদের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছে। দু একটি থেকে ইতিমধ্যে ভিসিরা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকার দলীয় ছাত্রলীগ ও সরকার অনুগত শিক্ষক-কর্মচারীরা মিলে আন্দোলনরত ছাত্র-শিক্ষকদের উপর হামলে পড়লেও আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। শাসক দলের লোকেরা জনগণকর্তৃক ধিকৃত পরাজিত শক্তিকে তাদের অপকর্ম আড়াল করার ঢাল হিসাবে ব্যবহার করছে।
খালেকুজ্জামান বলেন, অর্থব্যবস্থার প্রধান দুই খাত ব্যাংক ও পুঁজিবাজার লুট করে ফাঁকা করে ফেলা হয়েছে। প্রকল্প, মেগা প্রকল্পের নামে লুটপাট আরও ভয়াবহ। মেয়াদকাল বাড়িয়ে, অতিমূল্যায়িত করে, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় চাপিয়ে, নিন্মমান সামগ্রী ব্যবহার ও ডজন ডজন লোকের বিদেশ ভ্রমণ, হাতি পোষার মতো পরামর্শক পুষে লুটতরাজ জায়েজ করা হচ্ছে। গোটা শিক্ষা ব্যবস্থাকে যেভাবে ভঙ্গুর করে দেয়া হয়েছে তা কয়েক দশকে উঠে দাঁড়াতে পারবে কিনা সন্দেহ থেকে যাচ্ছে।
স্বাস্থ্য সেবার বেহাল দশা এমনই যে পরিবারের একজন সদস্যকে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করতে গোটা পরিবারকে সর্বনাশের মুখোমুখি দাঁড়াতে হয়। পুঁজিবাদী ভোগবাদ আর অপঃসংস্কৃতির লাগামহীন বিকাশ সামাজিক সাংস্কৃতিক নৈতিক অসুস্থতাকে ক্রমাগত বাড়িয়ে চলেছে। কিশোর তরুণসহ ৮০ লক্ষ মানুষ মাদকাসক্ত। নারী শিশু চরম নিরাপত্তাহীনতায় বাস করছে। অচিন্তনীয় অবিশ্বাস্য সহিংসতা বর্বরতা নিত্যদিন মানুষের বিবেককে পীড়িত করছে।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্বন্ধ সম্পর্কেও টানাপোড়েন বাড়ছে। বাণিজ্য ঘাটতি কমছে না। সীমান্তে বাংলাদেশী নাগরিক হত্যা বন্ধ হচ্ছে না। ৫৪ নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা ভারতের কাছ থেকে আদায় করা যাচ্ছে না। আনতে যাই তিস্তার পানি, দিয়ে আসতে হয় ফেনী নদীর পানি। একদিকে দুই প্রতিবেশীর বেড়া-কাঁটাতার অন্যদিকে ভারতের পর্যবেক্ষণ রাডার। আমাদের নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ দায়িত্ব অন্যদের হাতে দিলে সার্বভৌমত্ব যে কতবড় হোঁচট খায় তা বলার অপেক্ষা রাখে না। রোহিঙ্গা সংকটের এখনও কোন কূলকিনারা করা যায়নি। এরই মধ্যে আসাম এবং ভারত থেকে বাংলাদেশী নামাবলী গায়ে চাপিয়ে ৪০ লক্ষাধিক ভারতীয় মুসলিম নাগরিককে ঠেলে পাঠানোর হুমকি দেয়া হচ্ছে। চীন, ভারত, মার্কিন, পাক সৌদি ইত্যাদি সমীকরণে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থে অটল থাকতে পারছে না শাসক শ্রেণি তাদের আভ্যন্তরীণ শক্তি সামর্থহীনতা ও সঠিক নীতি কৌশলগত ঘাটতি দুর্বলতার কারণে। এ দুর্গতি বর্ণনার শেষ নেই। ফলে বাংলাদেশকে ও দেশের জনগণকে বর্তমান ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের কবল থেকে বাঁচাতে হলে আমাদেরকে মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকারের দিকে দৃষ্টি ফেরাতে হবে। সমাজ বিকাশের ইতিহাস নির্ধারিত পথনির্দেশ মেনে এগুতে হবে। সেজন্য রুশ বিপ্লবের শিক্ষা ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের দিক নিশানা সামনে রেখে বাম প্রগতিশীল শক্তিকে দায়িত্ব নিয়ে শ্রমিক, কৃষক, ছাত্র, নারী, সংস্কৃতিসেবী পেশাজীবীসহ সর্বস্তরের মানুষকে পরিবর্তনের লড়াইয়ের সামিল করতে হবে। সর্বোচ্চ সাধ্যে ও সর্বোচ্চ বুঝাপড়ায় সকল বাম-প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বলিষ্ঠ পদক্ষেপে আন্দোলনে নামতে হবে। এর কোন বিকল্প নেই। এটাই বর্তমান সময়ের ডাক। বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ এর ৩৯তম প্রতিষ্ঠা দিবসে আমরা এ আহ্বান জানাচ্ছি।