বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আইনজীবী সমাবেশে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, বাংলাদেশ এখন গণতন্ত্রহীনতার রোল মডেল, একটি ভোটারবিহীন সরকারের রোল মডেল, ভোট চুরির রোল মডেল।
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন জোটের অন্যতম শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন সত্য কথা বলেছেন। পাঁচ বছর ক্ষমতায় আয়েশে থেকে সত্য বলেছেন, এজন্য তাকে ধন্যবাদ। মেননের এ বক্তব্যের পরে সরকারের উচিত ছিল অবিলম্বে সংসদ ভেঙে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন দেয়া। তাহলেই দেশে গণতন্ত্র ও নিরপেক্ষ সরকার ফিরে আসবে। তিনি বলেন, এ সরকারের কোনো নৈতিক বা সাংবিধানিক অধিকার নেই রাষ্ট্র পরিচালনা করার।
শনিবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাব অডিটরিয়ামে বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের সংগঠন গণতন্ত্র ও খালেদা জিয়ার মুক্তি আইনজীবী আন্দোলনের উদ্যোগে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সংসদ বিলুপ্ত করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে আইনজীবী সমাবেশ তিনি এসব কথা বলেন।
সংগঠনের চেয়ারম্যান আইনজীবী তৈমূর আলম খন্দকারের সভাপতিত্বে সমাবেশ উদ্বোধন করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের আহ্বায়ক প্রবীণ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। সংগঠনের মহাসচিব অ্যাডভোকেট এ বি এম রফিকুল হক তালুকদার রাজা, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আনিছুর রহমান খান ও সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের মহাসচিব আইয়ুব আলী আশরাফীর উপস্থাপনায় আইনজীবী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি জয়নুল আবদীন, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্যসচিব ফজলুর রহমান, সিনিয়র আইনজীবী গিয়াস উদ্দিন আহমেদ, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহাবুব উদ্দিন খোকন, বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, আইনজীবী গোলাম মোস্তফা, শামসুর রহমান, শিমুল বিশ^াস, আবেদ রাজা, শাহ আহমেদ বাদল, আব্বাস উদ্দিন, হুমায়ুন কবির, এ কে এম আজিজুর রহমান, ইকবাল হোসেন, খোরশেদ মিয়া আলম, রুহুল কুদ্দুস কাজল, এম. বজলুর রহমান, আবদুল বাছেদ ভূঞা, মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুর রহমান মুজিব, আ: মোতালেব, নুরুজ্জামান, মাহাফুজুল হক, মীর মিজানুর রহমান, আতাহার হোসেন চৌধুরী সবুজ, মো: আবু আল ইউসুফ খান টিপু, মো: জাকারিয়া মোল্লা প্রমুখ।
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, আদালত বেগম জিয়ার জামিন দেবে না। কারণ, সরকার চায় না বলেই তার জামিন হচ্ছে না। তার জামিন আইনের মাধ্যমে সম্ভব হবে বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি না। রাজনৈতিক প্রভাবের কারণেই আজ এক বছর আট মাস তার জামিন হয় না। তার মুক্তির একমাত্র পথ হলো রাজপথ। যদি আমরা আন্দোলন করি, সেই আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করতে পারব। দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে পারব।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বলেছেন, নির্বাচন না থাকলে দলীয় রাজনীতি শক্তিহীন হয়ে পড়ে। রাজনীতির শক্তি জনগণ। সেই জনগণই আজ ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। সরকারও জনসমর্থনহীন একটি ঝুলন্ত সরকার। সম্পূর্ণভাবে পুলিশি শক্তি ও মামলার ওপর নির্ভরশীল। তিনি বলেন, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের জোয়ারে সরকার ভেসে যাচ্ছে। দেশ ভয়াবহ নৈরাজ্যের দিকে ধাবিত হচ্ছে। সরকার নিজেও নৈরাজ্যের স্বীকার। আর গণবিচ্ছিন্ন সরকারকে দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতির ওপর নির্ভর করতে হয়েছে। দেশব্যাপী ভয়-ভীতি ও আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য ছাত্রদের ব্যবহার করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হলে টর্চার সেল গঠন করা হয়েছে। তিনি বলেন, লুটপাটের রাজনীতির চিত্র শুধু ক্যাসিনো ব্যবসায়ীদের শত শত কোটি টাকার দুর্নীতির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে।