ভারতে একদিনে আক্রান্তের রেকর্ড ১২ হাজার!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা; ভারতে প্রতিদিনই আগের দিনের সংক্রমণের রেকর্ড ভেঙে চলেছে মহামারি করোনাভাইরাস। আজ রবিবার (১৪ জুন ২০২০) সকালে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগের ২৪ ঘণ্টায় প্রাণঘাতী করোনায় ১১ হাজার ৯২৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। দেশটিতে এটি এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ আক্রান্তের রেকর্ড। এ নিয়ে পরপর দু’দিনই প্রায় ১২ হাজার মানুষের করোনা শনাক্ত হলো। ভারতে এ নিয়ে মোট করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ২০ হাজার ৯২২ জন। সর্বোচ্চ আক্রান্তের দিক থেকে বিশ্বে চতুর্থ স্থানে রয়েছে দেশটি। বিশ্ব তালিকায় যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল ও রাশিয়ার পরই ভারত। খবর এনডিটিভি ও টাইমস অব ইন্ডিয়ার।

  • ভারতীয় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩১১ জন। এ নিয়ে মোট মারা গেলেন ৯ হাজার ১৯৫ জন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, সবচেয়ে বিপর্যস্ত পাঁচ রাজ্য মহারাষ্ট্র, দিল্লি, গুজরাট, তামিলনাড়ু ও উত্তরপ্রদেশ। এর মধ্যে শুধু মহারাষ্ট্রেই মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ৮৩০। মৃতের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা গুজরাটে প্রাণ হারিয়েছেন ১ হাজার ৪৪৮ জন। দিল্লিতে মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ২৭১।

  • করোনাভাইরাসের সংক্রমণেও শীর্ষে মহারাষ্ট্র। একমাত্র এ রাজ্যেই আক্রান্তের সংখ্যা লক্ষাধিক। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, এ রাজ্যে মোট আক্রান্ত ১ লাখ ৪ হাজার ৫৬৮ জন। এছাড়া তামিলনাড়ুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৪২ হাজার ৬৮৭ জন। দিল্লিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৮ হাজার ৯৫৮ জন। গুজরাটে করোনা পজিটিভ ২৩ হাজার ৩৮ জন মানুষ। উত্তরপ্রদেশে আক্রান্ত ১৩ হাজার ১১৮ জন।

করোনা সংক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে পশ্চিমবঙ্গেও। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসেবে এ রাজ্যে মোট আক্রান্ত ১০ হাজার ৬৯৮ জন। রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৪৬৩ জনের।

  • এদিকে, সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্যালোচনায় শনিবার মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধনসহ মন্ত্রিসভার প্রবীণ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত এলাকার সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্যালোচনায় প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে উঠে এসেছে, দেশের মোট করোনা আক্রান্তের দুই-তৃতীয়াংশই রয়েছে পাঁচ রাজ্যে। তাছাড়া এই রাজ্যগুলোর বড় শহরগুলোতেও দ্রুত হারে বাড়ছে সংক্রমণ। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত পাঁচ রাজ্যে করোনার লাগাম টানতে আরও জোরালো পরিকল্পনার নির্দেশ দিয়েছেন মোদি। আগামী ১৬ ও ১৭ জুন দুইদিন রাজ্যগুলোর মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন মোদি।

এদিকে জরুরি ভিত্তিতে করোনা চিকিৎসার জন্য গাইডলাইনে সংশোধনী এনেছে ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়েছে, জরুরি পরিস্থিতিতে রেমডেসিভির ওষুধ প্রয়োগ করা যাবে। প্রয়োগ করা যাবে টসিলিজুমেব ওষুধ আর প্রয়োজনে প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগ করা যেতে পারে। জানা গেছে, রেমডেসিভির সংক্রমণ প্রতিষেধক আর টসিলিজুমেব রোগ প্রতিরোধকারী ওষুধ হিসেবে কার্যকরী। পাশাপাশি করোনা চিকিৎসার একদম শুরুতে ম্যালেরিয়া-প্রতিরোধী হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ব্যবহার করতে পারেন চিকিৎসকরা।

এদিকে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনের সর্বশেষ (১৪ জুন ২০২০) তথ্য অনুযায়ী দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩২ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। ফলে ভাইরাসটিতে মোট ১১৭১ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৩  হাজার ১৪১ জন। এতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৮৭  হাজার ৫২০জনে। গতকাল নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল ১৬ হাজার ৬৩৮টি আর আজ পরীক্ষা করা হয়েছে ১৪৫০৫ টি। নমুনা পরীক্ষা কমলেও বেড়েছে শনাক্তের সংখ্যা ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৯০৩ জন। ফলে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেন মোট ১৮ হাজার ৩৩১ জন।

আমাদের বাণী ডট কম/১৪জুন ২০২০/ডিএ 

Check Also

ভারতে কোভিড হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ড: নিহত ৫

ঢাকাঃ ভারতে একটি কোভিড হাসপাতালে আগুন লেগে ৫ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। দগ্ধ হয়েছেন আরও অনেকেই। …