ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকা; হেফাজতের মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীকে জামায়াতের এজেন্ট বলে আখ্যা দিলেন হেফাজতের আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফীর পুত্র আনাস মাদানী। শাপলা চত্বরে রক্তক্ষয়ী ঘটনায় বাবুনগরীর ও জামায়াতের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে দায়ী করেন তিনি। অজ্ঞাত এক ব্যক্তির সঙ্গে শাহ আহমদ শফীর পুত্র আনাস মাদানীর একটি ফোনালাপ ফাঁস হয় সম্প্রতি। যেখানে এ ধরনের অভিযোগ তুলেন শফীপুত্র।
- এই ফোনালাপ ছড়িয়ে পড়ার পর হেফাজতের নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে জামায়াত সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করে আনাস মাদানীর বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বুধবার রাতে গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়েছেন হেফাজতের মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। বিবৃতিতে বাবুনগরী বলেন, জামায়াতের সঙ্গে অতীত-বর্তমানে কোনো সময়ই আমার সমপর্ক ছিল না। বরং পুরো জীবন আমার লেখালেখি ও বয়ান-বক্তৃতায় জামায়াতের ভ্রান্ত আকিদা সমপর্কে আমি দেশবাসীকে সচেতন করে এসেছি।
তিনি বলেন, জামায়াত সংশ্লিষ্টতা নিয়ে আমার সমপর্কে সে যা বলেছে, সেটা তার পরিকল্পিত মিথ্যাচার। এহেন মিথ্যাচার আমাকে বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করার ধারাবাহিক ষড়যন্ত্রেরই অংশ। এগুলো আমার মানহানির অপচেষ্টা। তিনি বলেন, মাওলানা আনাস মাদানী ফোনালাপে ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরের মর্মান্তিক ঘটনার সমপূর্ণ দায়ভার আমার ওপর চাপিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা করেছেন। শাপলা চত্বরের মর্মান্তিক ঘটনা নিয়ে এমন ডাহা মিথ্যা কথা বলতে পারবে, তা আমি আশা করিনি। তিনি আরও বলেন, শাপলা চত্বরের ঘটনায় জেলে গেলাম আমি, রক্ত দিলাম আমি। রিমান্ডে অমানুষিক নির্যাতন ভোগ করলাম আমি। সেই রাতে হেফাজতের সমাবেশে কী হয়েছিল তা জাতি জানে, কিন্তু মামলার আসামি হলাম আমি।
- ফোনালাপে যা বললেন শফীপুত্র : আনাস মাদানী সাহেব আমরা তো আপনার ভক্ত। আপনার বিরুদ্ধে নানা ধরনের সমালোচনা শুনতেছি, এগুলো একটু এজাহাত করলে ভালো হয়। আনাস মাদানী বলেন, এজাহাত কয়টা করব? আব্বাকে নিয়ে তো ব্যস্ত থাকতে হয়, আব্বা অসুস্থ। সবগুলো যদি এজাহাত করতে যাই, তাহলে তো আমাকে আর কাজ করতে হবে না। এ সময় ওই ব্যক্তি অনুরোধ করেন, যেন একবার লাইভে এসে সব বিষয় পরিষ্কার করেন। জবাবে আনাস মাদানী বলেন, ঠিক আছে আমি একবার আসলাম। এর পরদিন তারা আসবে, পরদিন আবারও আমাকে আসতে হবে। এভাবে তো সিলসিলা জারি হয়ে যাবে। জাহেলদের জবাব দেব কী জন্য? আমি আল্লাহর কাছে সোপর্দ করতেছি। এখন তো পুরো বাংলাদেশ পুরো কওমি অঙ্গন বিষয়গুলো নিয়ে আপনার সমালোচনা করতেছে। আমরা কাদেরকে এখন আকাবির বলব? কাদের অনুসরণ করব? জবাবে আনাস মাদানী বলেন, আপনাদের আকাবির যারা ছিল তারা এখনও বহাল আছে।
তাদেরকে মানতে পারবেন, এদের মধ্যে এখনও কোনো ঘাপলা আসে নাই। ওই ব্যক্তি তখন বলেন, মানুষ আমাদেরকে হাসির পাত্র বানাইতেছে, প্লিজ আমাদের রক্ষা করেন। এ সময় কিছুটা উত্তেজিতভাবে আনাস মাদানী বলেন, এসব আমরা করতেছি না, বাবুনগরী করতেছে। বাবুনগরী জামায়াতের সঙ্গে কাজ করতেছে। ওনার সঙ্গে আপনারা কথা বলেন। বাবুনগরী সাহেবকে পুরো বাংলাদেশে আমরা যা দেখলাম, উনিতো সব সময় বাতিলের বিরুদ্ধে কথা বলেন। জবাবে আনাস মাদানী বলেন, হ্যাঁ, বলেন। সব সময় জামায়াতের সঙ্গে মিলে কাজ করেন। শাপলা চত্বরে জামায়াতের সঙ্গে মিলে মাইরটা খাওয়াইছে বাবুনগরী। ডকুমেন্ট আছে তো।
- এ সময় ওই ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, ডকুমেন্ট থাকলে পেশ করেন, তাহলে আমরা বাবুনগরী বয়কট করব। জবাবে আনাস মাদানী বলেন, ঠিক আছে, সময় আসলে পেশ করব।
আমাদের বাণী ডট কম/০৩ জুলাই ২০২০/পিপিএম