বাংলাদেশের সংবিধানের সংশােধনীসমূহ

বাংলাদেশের সংবিধানের সংশােধনীসমূহ

বাংলাদেশের সংবিধান সংশােধন হয়েছে ১৭বার

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান = ৪ বার

মনে রাখার টেকনিক রাষ্ট্রপতি”। = “যুদ্ধ জরুরি, সীমানার জন্য বলেছেন।

১ম সংশোধনী – যুদ্ধ

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করা। (জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৭৩ সালে)

২য় সংশোধনী – জরুরি

জরুরি অবস্থা ঘােষণার বিধান। (জাতীয় সংসদে
গৃহীত হয় ১৯৭৩ সালে)

৩য় সংশোধনী – সীমানার জন্য বলেছেন

সীমান্ত চুক্তি অনুযায়ী (বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত চুক্তি) বেরুবাড়ীকে ভারতের নিকট হস্তান্তর।

৪র্থ সংশোধনী – রাষ্ট্রপতি

রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থার প্রবর্তন। অর্থাৎ সংসদীয় সরকার ব্যবস্থার পরিবর্তে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থার প্রবর্তন এবং বহুদলীয় রাজনীতির পরিবর্তে একদলীয় রাজনীতি (বাকশাল) প্রবর্তন। (জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৭৫ সালে)

জিয়াউর রহমান = ১ বার

৫ম সংশোধনী –

জিয়াউর রহমানের সামরিক শাসনের বৈধতা দান। বাংলাদেশের সংবিধানের শুরুতে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রহিম’ সংযােজন এবং সংবিধানে ‘বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ’-এর পরিবর্তে ‘বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ’-এর প্রবর্তন এবং সংবিধানের মূলনীতি ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ এর স্থলে ‘আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস প্রতিস্থাপন করেন। (জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৭৯ সালে)

আবদুর সাত্তার =১ বার।

৬ষ্ঠ সংশোধনী –

উপ-রাষ্ট্রপতির পদ থেকে রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনের বিধান নিশ্চিতকরণ।

হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ = ৪ বার

মনে রাখার টেকনিক= “সামরিক শাসন বৈধ করল ইসলাম দুই মহিলা”।

৭ম সংশোধনী –

সামরিক শাসন বৈধ করল= হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সামরিক শাসনের বৈধতা প্রদান।

৮ম সংশোধনী –

ইসলাম ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান। Dacca শব্দের বানান Dhaka তে পরিবর্তন। (জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৮৮ সালে)

( রাষ্ট্রধর্ম পরিবর্তনের সাথে সাথে রাজধানীর নামেরও পরিবর্তন করা হয় ১৯৮৮ সালে। যদিও সংবিধানে Dacca র বানান Dhaka তে পরিবর্তন করা হয় ১৯৮৮ সালে। তবে এমনিতে Dacca শব্দের বানান Dhaka তে পরিবর্তন করা হয় ১৯৮২ সালে। পরবর্তীতে, ১৯৮৮ সালে সংবিধানের অষ্টম সংশােধনীর মে বিষয়টি সংবিধানে পরিবর্তন করা হয়)

৯ম সংশোধনী –

দুই

রাষ্ট্রপতি পদে কোনাে ব্যক্তিকে একাধিকক্রমে দুই মেয়াদে সীমাবদ্ধ রাখা। অর্থাৎ কোনাে ব্যক্তি রাষ্ট্রপতি পদে দুই মেয়াদের বেশি থাকতে পারবেন না।

১০ম – মহিলা

মহিলাদের জন্য ৩০টি আসন জাতীয় সংসদে আরাে ১০ বছরের জন্য সংরক্ষণ।

খালেদা জিয়া= ৪ বার

মনে রাখার কৌশল= “SSC”

১১ম সংশোধনী –

S

বিচারপতি সাহাবুদ্দীনের স্বপদে ফিরে যাওয়ার বিধান নিশ্চিতকরণ।

১২ম সংশোধনী –

S

সংসদীয় সরকার ব্যবস্থার পুনঃপ্রবর্তন। অর্থাৎ রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থার পরিবর্তে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থার পুনঃপ্রবর্তন এবং উপ-রাষ্ট্রপতির পদ বিলুপ্ত করা। (জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯১ সালে)

( সংবিধানের এই দ্বাদশ সংশােধনীকে সংবিধানের চতুর্থ সংশােধনীর বিপরীত সংশােধনী বলা হয়। কারণ ১৯৭৫ সালে চতুর্থ সংশােধনীর মাধ্যমে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থার পরিবর্তে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থার প্রবর্তন করা হয়েছিল । আবার দ্বাদশ সংশােধনীর মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থার পরিবর্তে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থার পুনঃপ্রবর্তন করা হয়; যা এখনাে বিদ্যমান রয়েছে।)

১৩ম সংশোধনী –

C

Caretaker সরকার (তত্ত্বাবধায়ক সরকার) ব্যবস্থার প্রবর্তন। (জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে)

১৪ম সংশোধনী –

মনে রাখার টেকনিক= “৪৫টি মহিলা ছবি দেখাল বয়স বৃদ্ধির জন্য

৪৫ = ৪৫টি মহিলা আসন আগামী ১০ বছরের জন্য জাতীয় সংরক্ষণ করা।

ছবি দেখাল = সরকারিভাবে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি সংরক্ষণ ও প্রদর্শন।

বয়স বৃদ্ধি = প্রধান বিচারপতির বয়স ৬৫ থেকে ৬৭ তে, সরকারি কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান ৬৫ তে, মহাহিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের বয়স ৬৫ বছরে উন্নীতকরণ।

শেখ হাসিনা = ৩ বার

মনে রাখার টেকনিক “তত্ত্বাবধায়ক বাতিল করে বিচারপতির জন্য নারীর আসন ২৫ বছর সংরক্ষণ করা হবে”।

১৫ম সংশোধনী –

তত্ত্বাবধায়ক বাতিল করে

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল এবং দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান। জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংখ্যা ৪৫ টি থেকে ৫০ টিতে বৃদ্ধি করা।

‘৭২ এর সংবিধানের চারটি মূলনীতিতে ফিরে যাওয়া । অর্থাৎ সংবিধানের মূলনীতি আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাসের স্থলে ধর্মনিরপেক্ষতা মূলনীতি প্রতিস্থাপন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা হিসেবে স্বীকৃতি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি সংরক্ষণ ও প্রদর্শন।

সংবিধানে নতুন তিনটি তফসিল (৫ম, ৬ষ্ঠ ও ৭ম) এর সংযােজন। ৫ম তফসিলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ’ সংযােজিত হয়।

৬ষ্ঠ তফসিলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের ‘স্বাধীনতার ঘােষণা সংযােজিত হয়।

৭ম তফসিলে ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল তারিখে মুজিবনগর সরকার কর্তৃক জারিকৃত স্বাধীনতার ঘােষণাপত্রের সংযােজন করা হয়। (জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ২০১১ সালে)

১৬ম সংশোধনী –

বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে অর্পণ। (২০১৪ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে গৃহীত হয়)

১৭তম সংশোধনী –

নারীর আসন ২৫ বছর সংরক্ষণ করা হবে

নারীদের জন্য ৫০টি আসন আরাে ২৫ বছরের জন্য সংরক্ষণ করা।
জাতীয় সংসদে উত্থাপন: ১০ এপ্রিল, ২০১৮ সালে ।
জাতীয় সংসদে পাশ: ১৭তম সংবিধান সংশােধনী জাতীয় সংসদে।

পাশ হয় ৮ জুলাই, ২০১৮ সালে ।
সংশােধিত অনুচ্ছেদ: সংবিধানের ১৭তম সংশোধনীর মাধ্যমে ৬৫(৩) নং অনুচ্ছেদ সংশােধন করা হয়।

হাইকোর্ট কর্তৃক বাংলাদেশের সংবিধানের যেসব সংশােধনী অবৈধ ঘােষণা করেছে:

প্রশ্ন: হাইকোর্ট কর্তৃক বাংলাদেশের সংবিধানের মােট কতটি সংশােধনী অবৈধ ঘােষণা করেছে?

উঃ ৪টি।

প্রশ্ন: হাইকোর্ট বাংলাদেশের সংবিধানের কোন সংশােধনীকে অবৈধ ঘােষণা করেছে?

উঃ ৫ম, ৭ম, ১৩ম ও ১৬তম।

প্রশ্ন: হাইকোর্ট বাংলাদেশের সংবিধানের ৫ম সংশােধনীকে কবে অবৈধ ঘােষণা করে?

উঃ ২০০৫ সালে।
( হাইকোর্ট সংবিধানের পঞ্চম সংশােধনীকে অবৈধ ঘােষণার পাশাপাশি First distortion of constitution’ তথা ‘সংবিধানের প্রথম বিকৃতি বলে আখ্যায়িত করেছেন। কারণ এই সংশােধনীর মাধ্যমে সংবিধান বহির্ভূত উপায়ে ক্ষমতা দখলকে বৈধতা প্রদান করা হয়।)

প্রশ্ন: হাইকোর্ট বাংলাদেশের সংবিধানের ৭ম সংশােধনীকে কবে অবৈধ ঘােষণা করে?

উঃ ২০১০ সালে।

প্রশ্ন: হাইকোর্ট বাংলাদেশের সংবিধানের ১৩ম সংশােধনীকে কবে অবৈধ ঘােষণা করে?

উঃ ২০১১ সালে।
( ২০১১ সালে বাংলাদেশের সংবিধানের পঞ্চদশ সংশােধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয় এবং সেই ২০১১ সালেই হাইকোর্ট বাংলাদেশের সংবিধানের ১৩ম সংশােধনীকে (তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা) অবৈধ ঘােষণা করে)

প্রশ্ন: হাইকোর্ট বাংলাদেশের সংবিধানের ১৬তম সংশােধনীকে কবে অবৈধ ঘােষণা করে?

উঃ ২০১৬ সালের ৫ মে। (মনে রাখুন, ৫/৫/২০১৬)

নোট মোস্তাফিজার মোস্তাক

Check Also

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংক্ষিপ্ত জীবনী

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংক্ষিপ্ত জীবনী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী থেকে কেবল পরীক্ষায় আসার …