নিজস্ব সংবাদদাতা, চট্টগ্রাম; পার্বত্য চট্টগ্রামের বর্ষীয়ান রাজনৈতিক নেতা সুধাসিন্ধু খীসার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ চট্টগ্রাম জেলা শাখা।
- আজ বুধবার (১০ জুন ২০২০) বাসদ চট্টগ্রাম জোন ইনচার্জ কমরেড আল কাদেরী জয় সংবাদপত্রে দেয়া এক বিবৃতিতে পার্বত্য চট্টগ্রামের বর্ষীয়ান রাজনৈতিক নেতা সুধাসিন্ধু খীসার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন।
বিবৃতিতে আল কাদেরী জয় বলেন, ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের গঠিত জাতীয় কমিটির সদস্য হয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন।তিনি আরো বলেন সুধাসিন্ধু খীসা নিজের জীবন জীবিকার নিরাপত্তার চেয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের অধিকার আদায়ের দিকেই মনোযোগী ছিলেন।
- বিবৃতিতে আল কাদেরী জয় তাঁর সংগ্রামী জীবন, পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের জন্য অবদান কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন ও তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
উল্লেখ্য, গতকাল মঙ্গলবার (০৯ জুন ২০২০) রাত ১২টার দিকে খাগড়াছড়িস্থ নিজ বাড়িতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন পার্বত্য চট্টগ্রামের বর্ষীয়ান রাজনৈতিক নেতা সুধাসিন্ধু খীসা। তিনি ষাটের দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বামপন্থী মেধাবী ছাত্রনেতা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন বার্ধক্যজনিত নানা শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে শয্যাশায়ী ছিলেন।
- সুধাসিন্ধু খীসা পার্বত্য জেলার পাহাড়ি জনগণের কাছে একজন সুবক্তা ও শিক্ষা-দীক্ষায় উঁচু মানের নেতা হিসেবে জনপ্রিয় ছিলেন। তার মৃত্যুতে তিন পার্বত্য জেলার বাসিন্দাদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সত্তরোর্ধ্ব বয়সী এই নেতা স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে রেখে গেছেন।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞানের ছাত্র থাকাকালে তিনি বিপ্লবী ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। দেশ স্বাধীনের পর তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের স্বায়ত্তশাসনের রাজনীতির একজন নেতা হয়ে উঠেন। প্রয়াত সংসদ সদস্য মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা (এম. এন. লারমা)-র সঙ্গে মিলে গঠন করেন ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস)’। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি (শান্তিচুক্তি)’ স্বাক্ষরের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের গঠিত জাতীয় কমিটির সাথে অনুষ্ঠিত প্রতিটি সংলাপেই সুধাসিন্ধু খীসা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। তিনি নবম ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাঙামাটি আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনেও লড়েছিলেন।
আমাদের বাণী ডট কম/১০ জুন ২০২০/ডিএ