ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকা; নারীদের খৎনা করানোর বিতর্কিত প্রথাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে আফ্রিকার দেশ সুদান। এছাড়া এ কাজকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবেও ঘোষণা করেছে দেশটির সরকার।
জাতিসংঘের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২২ এপ্রিল সুদান সরকার নারীদের খৎনা নিয়ে আইন সংশোধন করে শাস্তির বিধানে অনুমোদন দেয়।
এই আইন অমান্য করলে অমান্যকারীর তিন বছরের কারাদণ্ড ও সঙ্গে অর্থ জরিমানা আদায় করা হবে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার।
এদিকে সুদান সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে নারী অধিকার নিয়ে কাজ করা আফ্রিকার সংগঠনগুলো। এটাকে তারা নারীদের বিজয় হিসেবে দেখছে।
সুদানে নারীদের খৎনার বহুল প্রচলন রয়েছে। দেশটির প্রতি ১০ জন নারীর মধ্যে ৯ জন জনকেই খৎনা করানো হয়।
জাতিসংঘের তথ্য মতে, সেখানকার ১৪ থেকে ৪৯ বছরের নারীদের মধ্যে ৮৭ শতাংশ বিভিন্ন ধরনের খৎনার শিকার হয়েছেন।
মানবাধিকার সংস্থা ইকুয়ালিটি নাউ’র আফ্রিকা অঞ্চলের পরিচালক ফাইজা মোহামেদ বলেন, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি নারী খৎনা সুদানে হয়। নারীদেরকে এই নির্যাতন থেকে রক্ষার জন্য শাস্তি দিতে হবে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে প্রায় ২০ কোটি নারীকে খৎনা করানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নারীর খৎনা বা ফিমেল জেনিটাল মিউটিল্যাশন (এফজিএম)-এর ফলে মূত্রনালীর সংক্রমণ, জরায়ু সংক্রমণ, কিডনি সংক্রমণ, সিস্ট, প্রজনন সমস্যা তৈরি হয়। এছাড়া খৎনা করানোর ফলে নারীদের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
সাংস্কৃতিক বিশ্বাস থেকে মেয়েদের সম্মান ও বিয়ের জন্য খৎনা আবশ্যক বলে বিবেচনা করা হয়।
গত কয়েক বছর ধরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নারীদের খৎনা নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। ইউনিসেফ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের অন্তত ২৯টি দেশে এখনও নারী খৎনার প্রচলন রয়েছে। যদিও এসব দেশের অন্তত ২৪টিতে নারী খৎনাবিরোধী আইন বা নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, তবে তা খুব মেনে চলা হয় না।
আমাদের বাণী ডট কম/০২ মে ২০২০/পিপিএ